রোজেনা পারভীন ( রুপালী) হত্যার রহস্য উদঘাটনের কাহিনী
২২ জুলাই, ২০১৯
মেয়েটির নাম ছিল রোজেনা পারভীন@ রুপালী, বয়স ২২ বছর, বাড়ী লালমনিরহাট জেলার সদর থানার মোস্তফি( ধুমেরকুঠি) গ্রামে। তিনি বুগড়া মেরিষ্ট্রোপ ক্লিনিকে চাকুরী করিতেন। ঘটনার দিন ইং ২৫/১২/১৬ খ্রিঃ বেলা ১২.০৫ ঘটিকার সময় সিংড়া থনাধীন রামানন্দ খাজুরিয়া ইউনিয়নের দো- পুকুড়িয়া গ্রামের ফাঁকা জুমির মাঠের মধ্যে জনৈক আফাজ উদ্দিন এর ইউক্যালিপটাস গাছের বাগানে মধ্যে আগুনে বিভিন্ন স্থানে ঝলসানো অবস্থায় একটি অজ্ঞাত মেয়ের মৃতঃ দেহ পাওয়া যায় যাহার পার্শ্বে একটি ভ্যানটি ব্যাগ এবং কিছু জামা কাপড় পাওয়া যায়। সিংড়া থানার পুলিশ সংবাদ প্রাপ্ত হইয়া সিংড়া সার্কেল এসপি সহ অফিসার ইনচার্জ সাহেব সঙ্গীয় এসআই দেব্রত দাস এবং ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল হইতে একটি জুয়েলারী কাগজের ছেড়া টুকরা জব্দ করেন এবং ঐ কাগজের ছেড়া টুকরা সাহায্যে অজ্ঞাতনামা লাশের সনাক্ত করেন। উক্ত লাশের সুরতহালসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। তখন মেয়েটির পরিবারকে সংবাদ প্রদান করা হইলে রুপালীর বাবা আঃ রাজ্জাক, পিতা ইব্রাহীম খলিল বাদী হইয়া ঘটনার বিষয়ে সিংড়া থানায় এজাহার দায়ের করেন। সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাহেব মামলাটি রুজু করিয়া তদন্তভার এসআই দেব্রত দাস এর উপর অর্পন করেন। তিনি মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করিয়া মামলার ঘটনার বিষয়ে জড়িত দুইজন আসামী শাহমীম(২৬) , মোঃ রমিজুল আলম(২৩)কে গ্রেফতার করেন। তখন আসামীদ্বয় ঘটনার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে সেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তি প্রদান করে। পরবর্তীতে উক্ত লাশের ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়। ময়না তদন্তকারী ডা. মৃত্যু সংক্রান্তে মতামত দেন যে, মৃত ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করিয়া হত্যা করা হইয়াছে। অবশেষে তদন্তকালে জানা যায় যে, আসামী শাহমীম এর সহিত ০৫/১২/১৪ তারিখ ডিসিষ্ট রুপালীকে প্রেমের সম্পর্ক করিয়া বিবাহ হয় । বিবাহের পর থেকে উক্ত আসামী শাহমীম ও তাহার পরিবার রুপারীকে বিভিন্নভাবে জ্বালা যন্ত্রনা করিত। বিবাহের এব বছর পরে উক্ত আসামী শাহমিম পারিবারিকভাবে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে নগদ ৩৩৫০০০/( তিন লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার ) টাকা প্রদান করিয়া বিবাহ বিচ্ছেদ করে। পরবর্তীতে আসামী শাহমিম উক্ত টাকা ফেরত নেওয়ার কৌশল করিয়া বাদীর অজান্তে বিভিন্নভাবে ফুসলাইয়া ও প্রলোভন দিয়া গত ইং ২১/০৮/১৫৬ তারিখ বাদী মেয়ে রুপালীকে পুনুরায় বিবাহ করে। কিন্তু শাহমিমের পরিবার থেকে রুপালীকে কোন ভাবে মেনে নিতে পারে না। তখন উক্ত আসামী শাহমিম তাহার ফুপাতো ভাই অপর আসামী রমিজুল আলমকে নিয়া রুপালীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। মামলার ঘটনার প্রায় দুইদিন পূর্ব হইতে বাদীর মেয়ে রুপালীকে বগুড়া মেরিষ্টোপ ক্লিনিকে চাকুরীর সুবাধে জনৈক মোঃ ইজারত হোসেন, পিতা মৃত জব্বার পোদ্দার সাং- বৃšদাবন দক্ষি পাড়া বটতলা, থানা ও জেলা- বগুড়া এর বাসায় ভাড়ায় থাকিত। আসামী মোঃ শাহমিম তাহার স্থায়ী ঠিকানায় বাবা মার সাথে বসবাস করিত। অপর আসামী রমিজুল প্রান কোম্পানির চাকুরীর সুবাধে সিংড়া বাজারে থাকিত। এমতবস্থায় ২২/১২/১৬ তারিখে আসামী শাহমিম ও রমিজুল পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফুসলাইয়া রুপালীকে ডেকে নিয়ে আসে এবংঐদিন সন্ধ্যায় তিনজন সাতমাথা বগুড়ায় মিলিত হয়। সেখান থেকে উক্ত আসামীদ্বয় রুপালীকে ফুসলাইয়া আসামী রমিজুলের বাসায় যাওয়ার কথা বলিয়া সিএনজি যোগে সিংড়া থানাধীন নাটোর বগুড়া মহাসড়কের সীমানার নিকট নেমে পায়ে হেটে ফাকা মাঠের মধ্যে হেটে সিংড়া থানাধীন ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের দোপুকুড়িয়া গ্রামের ফাঁকা জুমির মাঠের মধ্যে নিয়ে যায় সেখানে আসামী শাহমিম ও রমিজুল রুপালীকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে আসামী রমিজুল রুপালী বুকের উপর চড়ে বসে দুই হাত চেপে ধরে তখন আসামী শাহমিম রুপালী ওড়না কেড়ে নিয়া গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করিয়া হত্যা করে এবং হত্যার পরে লাশ গোপন করার জন্য তাহার লাশ ধরাধরি করিয়া জনৈক আফাজ উদ্দিন এর ইউক্যালিপটাস গাছের বাগানে মধ্যে নিয়া যায় এবং খড়কুটে দিয়া আগুন ধরে লাশের চেহারার বিকৃত ঘটাইয়া উক্ত স্থানে ফেলে আসে। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্ত শেষে আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বিজ্ঞ আদালত বিচার শেষে তাহাদের ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন।