সলংগা থানা এলাকায় ডিসিষ্ট মঞ্জিল সেখ’কে হত্যার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন, ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো গাড়ী ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধারসহ ঘটনার সহিত জড়িত ০৩ জন আসামী গ্রেফতার

১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

গত ০৫/০৯/২০২৪ খ্রিঃ বিকাল অনুমান ১৭.০০ ঘটিকার সময় ডিসিষ্ট মঞ্জিল সেখ প্রতিদিনের ন্যায় ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো গাড়ী নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। তারপর হতে ডিসিষ্ট মঞ্জিল সেখ আর বাড়ী ফিরে আসে নাই। ডিসিষ্ট এর স্ত্রী তার মেয়েদের নিয়ে রাতের খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পরে। ০৬/০৯/২০২৪ খ্রিঃ রাত্রি অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় ডিসিষ্ট বাড়ী ফিরে না আসায় তার ননদের মোবাইল হতে ডিসিষ্টকে কল করলে মোবাইল বন্ধ পায়। পরবর্তীতে ডিসিষ্টের স্ত্রী আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে সলংগা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডিসিষ্টের স্ত্রী খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ০৭/০৯/২০২৪ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৭.০০ ঘটিকার সময় লোকমুখে জানতে পারেন যে, সলংগা থানাধীন মোড়দীয়া গ্রামস্থ জনৈক মোঃ আবু তাহের এর ইটভাটার সামনে পাকা রাস্তার পূর্বপার্শ্বে ইটের পুরাতন স্তুপের আড়ালে হাত, পা ও মুখ বাধা অবস্থায় একটি বয়স্ক লোকের লাশ পড়ে আছে। তৎক্ষণাত ডিসিষ্টের স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে তার স্বামী ডিসিষ্ট মঞ্জিল সেখ এর মৃত দেহ বলে সনাক্ত করেন। এ সংক্রান্তে সলংগা থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়। সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জবান মোঃ ফারুক হোসেন মহোদয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এ্যান্ড অপস্) এর তত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ একরামুল হোসাইন এর নেতৃত্বে ডিবির এসআই(নিঃ)/মোঃ নাজমুল হক, বিপিএমসহ একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস টিমটি তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সহিত জড়িত আসামীদের সনাক্ত করে ১০/১২/২০২৪ খ্রিঃ রাত্রিতে রায়গঞ্জ থানাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ কাদের মোল্লা (৪০), পিতা-মৃত আবু সাইদ ২। মোঃ রাশেদুল ইসলাম (২৪), পিতা-মৃত আঃ আলীম মোল্লা, উভয় সাং-সোনাখাড়া, থানা-রায়গঞ্জ, জেলা-সিরাজগঞ্জদ্বয়কে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, আসামী মোঃ আহম্মেদ আলী এর কাছে ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো গাড়ীটি বিক্রি করেছে। ১১/১২/২০২৪ খ্রিঃ ভোর ০৫.৩০ ঘটিকার সময় আসামী ৩। মোঃ আহম্মেদ আলী (৩৩), পিতা-মোঃ দেলবার হোসেন, সাং-চড়ইমুড়ি, থানা-উল্লাপাড়া, জেলা-সিরাজগঞ্জকে উল্লাপাড়া তার নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করে তার স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে উল্লাপাড়া থানাধীন রাজমান গ্রাম হতে ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো গাড়ীটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত আলামতঃ ১। ডিসিষ্টের ব্যবহৃত একটি স্যামসাং বাটন মোবাইল ও ২। ডিসিষ্টের ব্যবহৃত ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো গাড়ী। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ৪/৫ জন আসামী গত ০৫/০৯/২০২৪ খ্রিঃ বিকাল ০৪.৩০ ঘটিকার সময় একটি বৈঠক করে। পরে আসামীগণ সলংগা বাজারে গিয়ে একটু ঘোরাফেরা করে বাজার হতে ০১টি গামছা ও ০১টি রশি কিনে নেয়। তারপর সিরাজগঞ্জ রোড থেকে আসামীগণ একটি মিশুক অটো গাড়ীতে করে ঘুড়কা বেলতলা বাজারে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে একটা মিশুক অটো গাড়ী ভাড়া করে রঘুনাথপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে অনেক রাত হওয়ায় আসামীগণ একটি ইটভাটা দেখে প্রস্রাব করার কথা বলে ইটের ভাটার সামনে মিশুকটি থামায়। তখন সঙ্গীয় আসামীগণ মিশুক ড্রাইভারের গলায় গামছা পেচিয়ে ইটের পুরাতন স্তুপের আড়ালে নিয়ে যায় এবং সকলে মিলে হাত পা চেপে ধরে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ইটের পুরাতন স্তুপের আড়ালে ফেলে রেখে ব্যাটারি চালিত মিশুক অটো গাড়ীটি ও ডিসিষ্টের মোবাইলটি নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে অটো মিশুকটি নিয়ে মোঃ আহম্মেদ মহাজনের বাড়ীতে গিয়ে ৩৮,০০০/- টাকায় অটো মিশুকটি বিক্রি করে দেয়। এতে ৩০০০/- টাকা খরচ হয় বাকি টাকা প্রত্যেকেই ৭,০০০/- টাকা করে ভাগ করে নিয়ে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীগণ নিজেদের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।







সর্বশেষ সংবাদ