ইজিবাইক চালক মানিক(২৪)কে গলাকেটে হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার সহিত জড়িতদের সনাক্তপূর্বক ০২ জন আসামীকে গ্রেফতার ও ইজিবাইক উদ্ধার
২৮ নভেম্বর, ২০২৩
ডিসিষ্ট মানিক (২৪), পিতা-মৃত আশরাফ আলী, মাতা-মোছাঃ রেজিয়া খাতুন, সাং-কালিয়া, থানা ও জেলা-সিরাজগঞ্জ অনুমান ৩/৪ মাস পূর্বে কিস্তিতে একটি ইজিবাইক কিনে ভাড়ায় চালায়। প্রতিদিনের ন্যায় গত ২১/১১/২০২৩ খ্রিঃ সকালে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ইজিবাইক নিয়ে ভাড়া মারার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। আবার দুপুরে এসে খাওয়া-দাওয়া শেষে ডিসিষ্ট মানিক ইজিবাইক নিয়ে বিকাল ০৪.০০ ঘটিকার সময় ভাড়া মারার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর ঐ দিন রাত্রি ০৮.০০ ঘটিকা পার হয়ে গেলেও মানিক বাড়িতে ফেরত না আসলে পরিবারের লোকজন অপেক্ষা করতে থাকে। একপর্যায়ে রাত্রি ১০.০০ ঘটিকা পার হয়ে গেলেও মানিক বাড়িতে ফিরে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ০১৮৫৪-৭৭৯০১১ নম্বরে ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পায়। পরবর্তীতে ডিসিষ্ট মানিকের পরিবারের লোকজন ২২/১১/২০২৩ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় লোকমুখে জানতে পারেন যে, কামারখন্দ থানাধীন থাইল উত্তরপাড়া গ্রামে বেত বাগানের মধ্যে একটি গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে মানিকের পরিবারের লোকজন দেখতে গেলে গলাকাটা লাশ দেখে চিনতে পারে যে লাশটি ডিসিষ্ট মানিকের। মানিককে হত্যা করে অজ্ঞাতনামা দূষ্কৃতিকারীরা ইজিবাইক ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। এ সংক্রান্তে কামারখন্দ থানায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) মহোদয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে জনাব মোঃ আদনান মুস্তাফিজ, সহকারী পুলিশ সুপার, কামারখন্দ সার্কেল, সিরাজগঞ্জ ও জনাব মোঃ জুলহাজ উদ্দীন, বিপিএম, পিপিএম, ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জ এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কামারখন্দ থানার সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস টিমটি ডিসিষ্ট মানিকের মৃতদেহ সনাক্তের পর তথ্য-প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সহিত জড়িত আসামীদের সনাক্ত করে ২২/১১/২০২৩ খ্রিঃ রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ খোকন শেখ(২৩), পিতা-মৃত বাবু শেখ ও ২। মোঃ সাদ্দাম শেখ(২১), পিতা-ছামাদ শেখ, উভয় সাং-কালিয়া (উত্তরপাড়া), থানা ও জেলা-সিরাজগঞ্জদ্বয়কে গ্রেফতার করেন। আসামী খোকনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেলকুচি থানা এলাকা হতে ডিসিষ্টের ইজিবাইকটি উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত আলামতঃ ১। ডিসিষ্টের ইজিবাইক ও ২। হত্যার কাজে ব্যবহৃত এন্ডিকাটার। ঘটনার সহিত জড়িত আসামী খোকন এবং সাদ্দামকে গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ইজিবাইক চালক ডিসিষ্ট মানিক তাদের পার্শ্ববর্তী গ্রামে বসবাস করে। ডিসিষ্ট মানিকের ইজিবাইক নতুন হওয়ায় আসামী খোকন, সাদ্দাম ও করিম (ছন্মনাম) পরিকল্পনা করে যে, ডিসিষ্ট মানিকের ইজিবাইক ছিনতাই করে বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নিবে। আসামীদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খোকন এবং সাদ্দাম ডিসিষ্ট মানিকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের জন্য একটি মেয়ে দেখতে কামারখন্দ থানা এলাকায় যাবে বলে ইজিবাইক ভাড়া করার জন্য মোবাইল নাম্বার নিয়ে আসে। ঘটনার দিন সন্ধ্যার সময় আসামীরা ডিসিষ্ট মানিকসহ তার ইজিবাইকে করে ০৩ জন আসামী কামারখন্দ থানা এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছিলে গ্রেফতারকৃত আসামী সাদ্দাম প্রস্রাব করার কথা বলে ইজিবাইক থামাতে বলে। ডিসিষ্ট মানিক ইজিবাইক থামালে ০৩জন আসামী মিলে তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মতে ডিসিষ্ট মানিকের গলায় এন্ডিকাটার ধরে ইজিবাইক হতে নিচে নামতে বলে। ডিসিষ্ট মানিক ইজিবাইক হতে নিচে নামলে আসামীগণ ধরে বেত বাগানে নিয়ে গিয়ে এন্ডিকাটার দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। ইজিবাইকটি আসামী খোকন এর বোন জামাই মোঃ আশরাফুলের বাড়ি বেলকুচিতে রেখে যে যার বাড়িতে চলে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় নিজেদের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামীদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।