সিরাজগঞ্জ জেলা শাহজাদপুর থানা পুলিশ কর্তৃক চাঞ্চল্যকর শিশু ফাতেমা হত্যা মামলার আসামী নজরুল গ্রেফতার ভিকটিমের কানের দুল উদ্ধার।

০৫ অগাস্ট, ২০২৩

[০৪ আগষ্ট ২০২৩ খ্রি.] ১। গত ৩১/০৭/২০২৩ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় শিশু ফাতেমা (৫), পিতা-মোঃ সোবাহান শেখ, মাতা-মোছাঃ নুরজাহান, সাং-মার্জান, ইউনিয়ন-গালা, থানা-শাহজাদপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ তার নানীর কোলে বসে ছিল। প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম এসে ফাতেমা খাতুনকে কুসর (আখ/ইক্ষু) খেতে দিবে বলে তাকে নিয়ে যায়। একই তারিখ বেলা অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় নজরুল শরীরের কাপড়-চোপড় ভেজা অবস্থায় দুই খন্ড কুসর (আখ/ইক্ষু) হাতে নিয়ে ফাতেমাদের বাড়ীতে এসে ফাতেমার সন্ধান করে এবং বলে যে ফাতেমা তার সাথে যায় নাই। এরপর সবাই মিলে ফাতেমার সন্ধান করতে থাকে এবং এলাকায় মাইকিং করে। এমতাবস্থায় ০২/০৮/২০২৩ খ্রিঃ বেলা অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকার সময় জনৈক ছবেদ সরদারের স্ত্রী ডলি বেগম ফাতেমার বাড়ীতে এসে বলে যে, শিয়ালে একটি পা নিয়ে চরার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এরপর থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা পুলিশ এসে সন্ধ্যা ০৬.১৫ ঘটিকার সময় শাহজাদপুর থানাধীন গালা ইউনিয়নের অন্তর্গত মার্জান গ্রামে জনৈক রাজেম সরকারের ডেমা ঘাসের ক্ষেতের মধ্যবর্তী স্থানে ফাতেমার অর্ধ গলা পচা, বাম পায়ের হাটুর নিচে কাটা ও হাড়, মাংস বাহির হওয়ায়, ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন অর্থাৎ নাই, দুই হাত দুই পাশে ছড়ানো মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর মৃত ফাতেমার মা মোছাঃ নুরজাহান শাহজাদপুর থানায় এসে এজাহার দায়ের করেন। ২। উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় উক্ত হত্যাকান্ডটি ব্যাপক গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়। পরিবারের একমাত্র মেয়ে ফাতেমা কে হারিয়ে পরিবারের লোকজন হয়ে পড়ে দিশেহারা। ৩। সিরাজগঞ্জ জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ কামরুজ্জামান, পিপিএম-সেবা এবং শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোহাম্মদ নজরুল ইসলামদ্বয়ের তত্ত্বাবধানে শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন জনাব মোঃ আবু সাঈদ ও এসআই শারফুল ইসলামদ্বয়ের নেতৃত্ত্বে শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি চৌকশ টিম অত্র থানাধীন ইসলামপুর ডায়া মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ০৩/০৮/২০২৩ খ্রিঃ রাত ০৮.৩০ ঘটিকায় হত্যাকারী ১। মোঃ নজরুল ইসলাম (২৫) পিতা-মোঃ আবেদ আলী, মাতা-মোছাঃ গুলি খাতুন, সাং-মার্জান, ইউনিয়ন-গালা, থানা-শাহজাদপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ গ্রেফতার করে এবং তার হেফাজত হতে মৃত ফাতেমার ০১ আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে। ৪। শিশু ফাতেমার পরিবারের ভাষ্য মতে, ফাতেমারা তিন ভাই এবং এক বোন। সে তৃতীয় এবং সে পরিবারের একমাত্র কন্যা সন্তান ছিল। তার বাবা সোবাহান শেখ ঢাকায় রিকশা চালান এবং তাহার মা নুরজাহান বেগম মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পরিবারের সবার আদরের মধ্যমনি ছিল ফাতেমা। ৫। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ নজরুল ইসলাম (২৫) কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালাইয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। ৪/৫ বছর পূর্বে সে তার নিজ গ্রাম থেকে চলে এসে বাদীর বাড়ীর কাছে জমি কিনে বাড়ী করে। সে দুইটি বিবাহ করেছিল এবং তার দুই স্ত্রীই তাকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন। সে শিশু মোছাঃ ফাতেমা খাতুন কে মাঝেমধ্যে সদায় (ছোট বাচ্চাদের লোভনীয় খাবার) কিনে দিত। সেই কারনে প্রায়ই শিশু ফাতেমা খাতুন আসামী নজরুল ইসলামদের বাড়ীতে যাইতো এবং ফাতেমা তাকে মামা ডাকতো। সে ১০/১৫ দিন আগে ঢাকা থেকে বাড়ি আসে এবং সুনির্দিষ্ট কোন পেশা না থাকায় সে দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় সে শিশু ফাতেমার কানে স্বর্ণের দুল দেখে তা নেয়ার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সে গত ইং ৩১/০৭/২৩ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকায় শিশু ফাতেমা কে নিয়ে ঘাস ক্ষেতে যায়। এরপর সে ভয় দেখিয়ে তার কানের দুল খুলে নেয়। সে সময় শিশু ফাতেমা চিৎকার দিলে সে গলা চেপে ধরে শিশু ফাতেমা কে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে বাসায় আসে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকে। ৬। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী মো: নজরুল ফাতেমা কে হত্যার কথা স্বীকার করেছে এবং তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।







সর্বশেষ সংবাদ