পাবনা শহরে আলোচিত পরপর তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গুলি করে টাকা ছিনতাই চক্রের চার জন দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী/ডাকাত আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য আলামত সহ গ্রেফতার।
১৫ অক্টোবর, ২০২২
"প্রেস রিলিজ" পাবনা শহরে আলোচিত পরপর তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গুলি করে টাকা ছিনতাই চক্রের চার জন দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী/ডাকাত আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য আলামত সহ গ্রেফতার। ঘটনা-১: গত ইং ২২/০৯/২০২২ তারিখ মোঃ মনিরুল ইসলাম (৩৯),পিতা-আলহাজ মোঃ আফতার, সাং-অনন্ত বাজার দক্ষিণ রাঘবপুর, থানা-পাবনা সদর, জেলা-পাবনা ব্যাংক হতে ৩,০০,০০০/-(তিন লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে বাড়ী ফেরার সময় পাবনা সদর থানাধীন কালাচাদ পাড়ার গলির ভিতর আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার নিকট থাকা উক্ত টাকা ছিনতাই করে। ঘটনা-২: ইং ০১/১০/২০২২ তারিখে এসএম সামস ইকবাল(৪৪),পিতা-এসএম সরোয়ার হোসেন, সাং-মালঞ্চী, থানা ও জেলা-পাবনা জনতা ব্যাংক, আতাইকুলা শাখা হইতে ১৪,০০,০০০/-(চৌদ্দ লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে নিজ বাড়ীতে আসার পথে জালালপুর হাইওয়ে রাস্তার উপর গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীরা তাকে তিনটি গুলি করে আহত করে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে তারা উক্ত টাকা ছিনতাই না করে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনা-৩: ইং ০৪/১০/২০২২ তারিখে দুপুর ১৩.৫০ ঘটিকার সময় মাহমুদা খাতুন (২৭),পিতা-মোঃ আব্দুল মজিদ, স্বামী-মোঃ সাইফুল ইসলাম, সাং-উত্তর পাড়া ছোট মনোহরপুর, মালিগাছা, থানা-পাবনা সদর, জেলা-পাবনা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, কালাচাদ পাড়া শাখা হইতে ৯,০০,০০০/-(নয় লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে ব্যাটারী চালিত রিক্সা যোগে নিজ বাড়ীতে ফেরার পথে পাবনা সদর থানাধীন গাছপাড়া পৌছামাত্র একটি পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে তিন জন ব্যক্তি উক্ত ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার গতিরোধ করে দাড়ায় এবং মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে মাহমুদা খাতুন এর নিকট থাকা নগদ ৯,০০,০০০/-(নয় লক্ষ) টাকা সহ একটি হ্যান্ড ব্যাগ বলপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। উক্ত সময় স্থানীয় লোকজন আগাইয়া আসিলে ছিনতাইকারীরা এক রাউন্ড গুলি ফাঁকা ফায়ার করিয়া টাকার ব্যাগ সহ মোটরসাইকেল নিয়ে বাইপাস রোড হয়ে পাবনা বাস টার্মিনালের দিকে পালিয়ে যায়। এভাবে পাবনা শহরে পরপর তিনটি দুর্ধর্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা সংঘটিত হয়। উক্ত ঘটনার পরিপেক্ষিতে পাবনা সদর থানায় একটি দস্যুতার মামলা রুজু হয়। যাহার মামলা নং-০৮ তারিখ-০৫/১০/২০২২ইং ধারা-৩৯২ পেনাল কোড ১৮৬০। পাবনা জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আকবর আলী মুনসী মহোদয়ের নির্দেশনায় ও প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতিঃ পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ মাসুদ আলম এবং অতিঃ পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব মোঃ রোকনুজ্জামান সরকার এর নেতৃত্বে ওসি ডিবি, পাবনা এর মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন সহ তার টিমের এসআই (নিরস্ত্র) অসিত কুমার বসাক,এসআই (নিরস্ত্র) তানভীর রহমান এবং ওসি পাবনা সদর থানা জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পাবনা সদর থানার একটি টিমের যৌথ অভিযানে পাবনা সদর থানাধীন বাংলা ক্লিনিকের গলিতে ছদ্মবেশে ভাড়া নেওয়া জনৈক দেলোয়ার এর বসত বাড়ীর নিচ তলায় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, পিস্তল,গুলি,মোবাইল , জামাকাপড় সহ ছিনতাইকারীদের মূল পরিকল্পনাকারী আসামী ১।মোঃ মাসুদ রানা(৩২), পিতা-মোঃ ইউসুফ আলী, সাং-দক্ষিণ মাছিমপুর, থানা-পাবনা সদর, জেলা-পাবনা কে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে মাসুদ রানার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ভিকটিমের নিকট হইতে ছিনতাই করে নেওয়া মোবাইল, ব্যাগ এবং ৩,৮৩,০০০/-(তিন লক্ষ তেরাশি হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়। আসামী মাসুদ রানাকে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ০৪(চার) দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করিলে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, উক্ত মাসুদ রানা সহ আরো ৪/৫ জন ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত। আসামী মাসুদ রানা এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার অপরাপর সহযোগী ছিনতাইকারী ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজিপুর সহ বিভিন্ন স্থান হতে ২। মোঃ আল আমিন (৩৬), পিতা-মোঃ ধুলা মিয়া ওরফে দুলা মিয়া, সাং-রাগোবেন্দ্রপুর(গুচ্ছগ্রাম নালডিংগী), থানা-সাদুল্যাপুর, জেলা-গাইবান্ধা বর্তমান সাং-পূর্ব রাজাশন, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা, ৩।মোঃ ইব্রাহিম খান ওরফে মোর্শেদ খান ওরফে মামা (৪৯), পিতা- মৃত আইয়ুব আলী খান, সাং- জয়রা (১৫২ জয়রা উপজেলা রোড), উপজেলা/থানা- মানিকগঞ্জ সদর, জেলা -মানিকগঞ্জ, বর্তমান সাং-জহরচান্দা, থানা-আশুলিয়া, জেলা-ঢাকা, ৪। আব্দুর রহিম (৩২), পিতা-আবুল হোসেন, সাং-দক্ষিণ রাজাপুর, থানা-শরনখোলা, জেলা-বাগেরহাট, বর্তমান- হেমায়েতপুর জয়নবাড়ী, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকাগণকে গ্রেফতার করা হয়।মূলত আসামীগনদের নির্দিষ্ট কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই । তারা প্রথমে কোন একটি এলাকাকে টার্গেট করে ভূয়া নাম ঠিকানা দিয়ে নির্জন এলাকায় ছদ্মবেশে বাড়ী ভাড়া নিয়ে সেই এলাকার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট দিনে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং বয়স্ক টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করে তার পিছু নেয় এবং নির্জন স্থানে পৌছামাত্র তাদের আক্রমন করে উপর্যুপরি গুলি চালিয়ে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। ডাকাত মাসুদ রানা উক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদের আশ্রয়, মোটরসাইকেল, অস্ত্র এবং নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে।আসামীগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি,ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতা, খুন, মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। তাহাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক গ্রেফতারী পরোয়ানা মুলতবী রয়েছে। এই চক্রের আরো দুইজন সদস্য পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত রয়েছে। উদ্ধারকৃত আলামতের বর্ণনাঃ ১। একটি আগ্নেয়াস্ত্র 7.65mm পিস্তল এবং দুই রাউন্ড তাজা গুলি ও এক রাউন্ড ব্যবহৃত গুলির খোসা। ২। ছিনতাই হওয়া ৩,৮৩,০০০/-(তিন লক্ষ তেরাশি হাজার)টাকা। ৩। ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি পালসার এবং একটি সিটিআই-১০০ মোটরসাইকেল। ৪। ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোন। ৫। ছিনতাইকারীর ব্যবহৃত পোষাক(যাহা দ্বারা ছিনতাইকারীদের সনাক্ত করতে সহজ হয়)। ৬। বাদীর ছিনতাই হওয়া টাকার হ্যান্ড ব্যাগ (ভ্যানিটি ব্যাগ) এবং মোবাইল ফোন। ৭।ছিতাইকারীর মুলহোতা মাসুদ রানার জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। আসামীদের অপরাধ ইতিহাসঃ ১। আসামী মোঃ মাসুদ রানা এর বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় দস্যুতা ও অস্ত্র সহ ২টি মামলা রয়েছে। ২। আসামী মোঃ আল আমিন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় ছিনতাই, দস্যুতা,ডাকাতি, অস্ত্র সহ মোট ৬টি মামলা রয়েছে। ৩।আসামী মোঃ ইব্রাহিম খান ওরফে মোর্শেদ খান ওরফে মামা এর বিরুদ্ধে ছিনতাই, দস্যুতা, ডাকাতি, হত্যা, মাদক সহ ৭টি মামলা রয়েছে। ৪।আসামী আব্দুর রহিম এর বিরুদ্ধে তথ্য বিভিন্ন জেলায় হত্যা, ছিনতাই, দস্যুতা, ডাকাতি সহ ৪টি মামলা রয়েছে।