“পাবনা জেলা পুলিশের উদ্যোগে 'নারী শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সেবা ডেস্ক' এর সহায়তায় দীর্ঘ ০৬ বছর পর হারানো শিশু আমানউল্লাহ (১২) ফিরে পেল তার আপন ঠিকানা
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
“পাবনা জেলা পুলিশের উদ্যোগে আতাইকুলা থানা পুলিশের 'নারী শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সেবা ডেস্ক' এর সহায়তায় দীর্ঘ ০৬ বছর পর হারানো শিশু আমানউল্লাহ (১২) ফিরে পেল তার আপন ঠিকানা” , এসআই শহিদুর রহমান গত ইং ১৫/০২/২০২২ তারিখ পাবনা জেলার আতাইকুলা থানাধীন আতাইকুলা ইউপি এলাকায় ডিউটি করাকালীন ৯৯৯ এর সংবাদের ভিত্তিতে আমানউল্লাহ (১২) নামের একজন শিশু সন্তানকে উদ্ধার পূর্বক থানায় নিয়ে আসেন। এই বিষয়টি পুলিশ সুপার,পাবনা মহোদয়, জেলা পুলিশ পাবনার ফেসবুক পেইজে প্রচার করেন। শিশু আমানউল্লাহ তার পিতার নাম-মোঃ সিরাজুল,মাতার নাম-মনোয়ারা @ মনো,বড় বোনের নাম-শিরিন, ছোট বোনের নাম-শিলা বলতে পারে। সে আরও বলে তার নানার বাড়ি একটি গাঙ্গের পাশে।তার মনে পরে অনুমান ৫/৬ বছর পূর্বে ছোট বেলায় সে ঢাকায় হারিয়ে যায়। হারিয়ে যাওয়ার পর সে জামালপুর জেলা,ঢাকার সাভার সহ বিভিন্ন জায়গায় তার পিতা মাতার ঠিকানা খুঁজাখুজি করত এবং বিভিন্ন লোকের দোকানে কাজকর্ম করিয়া আসিতেছিল। দীর্ঘদিন পর তার মনে পরে তার পিতার বাড়ি পাবনা জেলার ধর্মগ্রাম গ্রামের কথা। সেই সূত্রধরে বাবা-মায়ের খোঁজে সে নিজেই গত ইং ১৫/০২/২০২২ তারিখ ঢাকা থেকে সরকার ট্রাভেলসে উঠে পাবনা আতাইকুলা থানাধীন ধর্মগ্রাম বাজারে সন্ধ্যায় নামে এবং তার পিতা-মাতার ঠিকানা খুঁজতে থাকে কিন্তু সে তার বাবা-মায়ের বাড়ি খুঁজে পায় না। স্থানীয় লোকজন তাকে পেয়ে ৯৯৯ এর মাধ্যমে আতাইকুলা থানা পুলিশকে জানায়। ডিউটিরত এসআই শহিদুর রহমান শিশুটিকে উদ্ধার পূর্বক থানায় নিয়ে আসে। গত ইং ১৬/০২/২০২২ তারিখ এসআই শহিদুর রহমান শিশু আমানউল্লাহ এর পিতার বসত ভিটার ঠিকানা খুঁজে বের করার জন্য এবং পিতা-মাতার কোলে শিশু আমানউল্লাহকে ফিরে দেওয়ার জন্য শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মগ্রাম গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করার এক পর্যায়ে এবং গাঙ্গের সূত্রধরে আটঘরিয়া থানাধীন শিবপুর বাজারে শিশুটিকে নিয়ে উপস্থিত হলে জনৈক একজন বয়স্ক ব্যক্তি শিশুটিকে দেখে বলে যে,শিশুটির চেহারা সাঁথিয়া থানাধীন নারিয়াগোদাই গ্রামে তার পরিচিত হাসান আলী পিতা-মৃত নওশের আলী এর চেহারার মতো (শিশুর আপন চাচা) দেখা যায়।সেখান থেকে এসআই শহিদুর রহমান শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে সাঁথিয়া থানাধীন নারিয়াগোদাই গ্রামস্থ হাসান আলীর বাড়িতে যাওয়া মাত্রই বাড়ির লোকজন শিশুটিকে চিনতে পারে। শিশুটির আপন দাদী,চাচা,ফুফু সহ স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে তাদের ০৬ বছর পূর্বে হারিয়ে যাওয়া শিশু আমানউল্লাহ হিসেবে সনাক্ত করে। শিশুটির আপন চাচা মোঃ হাসান আলী এসআই শহিদুর রহমানকে জানান যে, ০৬ বছর পূর্বে শিশুটির মাতা তার বাবাকে ছেড়ে শিশুটিকে ফেলে রেখে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। শিশুটির পরিবার দরিদ্র হওয়ায় তার বাবা তাকে ঢাকায় তার আপন ভাতিজা মোঃ রফিক এর কাছে তার বাসায় কাজের জন্য রেখে আসে। শিশু আমানউল্লাহ ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত উক্ত বাসায় থাকাকালে রাত্রীবেলায় বিছানায় প্র¯্রাব করার কারণে ঐ বাসার লোকজন শিশুটিকে বকাঝকা করলে শিশুটি কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে অন্যত্র চলে যায়। শিশুটিকে খুঁজে না পাওয়ায় ঐ বাসার মালিক শিশুটির আপন চাচাতো ভাই মোঃ রফিক ডিএমপি দারুস সালাম থানায় একটি হারানো জিডি করেন। শিশু আমানউল্লাহ ঢাকার উক্ত বাসা থেকে বের হয়ে আর সে বাসা খুঁজে পায় নাই। তারপর থেকে উক্ত শিশু আমানউল্লাহ ঢাকার গাবতলী,সাভার,সাভারের উলাইন সহ জামালপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে তার পিতা-মাতার ঠিকানা খুঁজতে থাকে এবং পাশাপাশি বিভিন্ন লোকের দোকানে কাজকর্ম করে। অপর দিকে শিশু আমানউল্লাহ হারিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তার অসহায় বাবা ঢাকায় গিয়ে ঢাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে তার হারানো শিশুটিকে খুঁজতে থাকে। অদ্যবধি শিশু আমানউল্লাহকে খুঁজে পাওয়ার আশায় তার পিতা ঢাকার গাবতলীতে অবস্থান করে বিভিন্ন কারখানায় ভ্রাম্যমান কাজকর্ম করার মাধ্যমে শিশুটির খুঁজাখুজি অব্যহত রেখেছে।পরিশেষে অদ্য আতাইকুলা থানা পুলিশের সহায়তায় দীর্ঘ ০৬ বছর পর নিখোঁজ শিশু আমানউল্লাহ (১২) ফিরে পেল তার আপন ঠিকানা। হস্তান্তর করা হলো শিশু আমানউল্লাহকে তার প্রকৃত অভিভাবকের নিকট।