পাবনা সদর থানায় ভিক্ষুক কর্তৃক ভিক্ষুক হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার।

১২ মে, ২০২১

পাবনা সদর থানায় ভিক্ষুক কর্তৃক ভিক্ষুক হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার। বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান। গত ০৮-০৫-২০২১ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ, আনুমানিক ১০.১৫ ঘটিকায় আলেয়া @ আল্লাদি (৫৫), স্বামী মৃত- শুকুর খন্দকার, বর্তমান স্বামী-হেলাল খান, ২। লিপি (২৫), পিতা হেলাল খান, স্বামী-লতিফ, উভয় সাং-চরমানিকদিয়ার, থানা-সুজানগর, জেলা পাবনাদেরকে যাকাতের কাপড় নেওয়ার বিষয় নিয়া ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরিয়া অজ্ঞাত মহিলার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উক্ত মহিলার পক্ষে অজ্ঞাত এক পুরুষ ও অন্যান্য মহিলা মিলে চাকু দ্বারা তাদের ১ নং রোগীর পেটের ডান পার্শ্বে ৩ টি আঘাত করে এবং ২ নং রোগীর পেটে নাভির পার্শ্বে, বামপায়ের উরুর উপরে আঘাত করে। আহতদের স্হানীয় একজন মহিলা তাদের দ্রুত পাবনা সদর হাসপাতাল অর্থোপেডিক্স সার্জারী ওয়ার্ডে আনুমানিক ১০.৪৫ ঘটিকায় ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করে। ১ নং রোগীর অবস্থা ভালো না মর্মে জানায় যে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফাড করার প্রয়োজন। এর কিছুক্ষণ পর আনুমানিক-১১.১৫ ঘটিকায় ১ নং রোগীর মৃত্যুবরণ করেন। উক্ত ঘটনার পর পর পুলিশে সু্পর পাবনার নির্দেশে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীকে চিহ্নিত করা হয়। আসামী ভাসমান ভিক্ষুক, সে প্রায় সময় কুষ্টিয়ায় অবস্থান করে। মামলাটি রুজুর পর পুলিশ সুপার পাবনা এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ জনাব মাসুদ আলম , অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সা্রকেল জনাব রোকন সরকার এর নেতৃত্বে সদর ফাড়ির পুলিশ ইন্সপেক্টর মোঃ আবুল কালাম তথ্য পযুক্তির মাধ্যমে আসামি কল্পনা কে কুষ্টিয়া হতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আটক করিতে সক্ষম হন। আসামি কল্পনার দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয় এবং বিজ্ঞ আদালতে আজ ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় গত শবে বরাতের রাতে ভিক্ষুক আল্লাদী ও ভিক্ষুক কল্পনা ভিক্ষা করতে আরিফপুর গোরস্থান মসজিদের যায়। সেখানে সকল ভিক্ষুক লাইন হয়ে বসে ভিক্ষা চাইতে থাকা কালে ভিক্ষুক আল্লাদী তার মেয়ে ও নাতনী সহ ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতে থাকে। এতে ভিক্ষুক আসামি কল্পনা ও আল্লাদীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় । এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয় এবং আল্লাদী কল্পনাকে লাঠি দ্বারা একটি আঘাত করে। উক্ত আঘাত কল্পনার বাম চোখের উপর লেগে চোখ ফুলে উঠে। এর পর কল্পনা তার বাড়ি চলে আসে। এর দু তিন দিন পর কল্পনার স্বামী ভিক্ষুক আসামি বাবলু কুষ্টিয়া এলাকা হতে ভিক্ষা করিয়া বাড়ি এসে তার স্ত্রী কল্পনা এর চোখ ফোলা দেখয়া এর কারন জানতে চায়। কল্পনা তার স্বামীকে সবে বরাতের রাতের ঘটনা খুলে বলে। বাবলু তার স্ত্রীর নিকট সব শুনে এর প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ব্যক্ত করে এবং সেই কারনে সব সময় তার কাছে একটি চাকু রাখে। যাতে আল্লাদীর সাথে দেখা হলে সে প্রতিশোধ নিতে পারে। গত ০৮/০৫/২০২১ তারিখ ভিক্ষুক আসামি বাবলু ও তার স্ত্রী কল্পনা সকালে সাহায্য নেওয়ার জন্য বড় বাজার পানির ট্যাংকির সামনে লাইজু হাজির বাড়ির সম্মুখে আসিয়া ভিক্ষুক আল্লাদী কে দেখতে পায়। কল্পনা তখন আঙ্গুল দিয়ে তার স্বামী কে দেখিয়ে বলে যে ঐ যে আল্লাদী । আল্লাদী ইহা দেখিয়া কল্পনার দিকে তেড়ে আসে এবং বলে যে কি তুই আজকেও আমার সাথে মারামারি করবি। কল্পনা ও এগিয়ে গেলে তাহাদের মধ্যে হাতাহাতি ও চুল টানা টানি শুরু হয়। একদিকে আল্লাদী ও তার মেয়ে, অন্যদিকে কল্পনা । এই দেখিয়া বাবলু তাহার ব্যাগ হতে চাকু বাহির করিয়া এগিয়ে যায় এবং আল্লাদীর পেটে চাকু ঢুকিয়ে দেয় । বাবলু আল্লাদী শরীরে বেশ কয়েকটি চাকু দিয়ে আঘাত করিলে আল্লাদী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অন্যান্য ভিক্ষুক আগাইয়া আসিলে তাহারা দৌড়ে তাদের বাড়ি যায় এবং চাকুটি পরিষ্কার করে রান্না ঘরের চালে গুজে রেখে কিছু কাপড়-চোপড় নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্য পালিয়ে যায় । পলাতক অপর আসামীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।







সর্বশেষ সংবাদ