গত ১২/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে বিকাল অনুমান ১৬.১৭ ঘটিকার সময় ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এ কর্মরত মোঃ মামুনুর রশিদ এবং মোঃ জোনায়েদ রহমান মিরাজ মোট ২৮,৫৫,০০০/- টাকা নিয়ে মেসার্স মীর ট্যাভেলস্ নামক ডাচ্ বাংলা মাস্টার এজেন্ট ব্যাংক হতে মোহনপুর ডাচ্ বাংলা এজেন্ট আউটলেট এবং কয়ড়া ডাচ্ বাংলা আউটলেটের চাহিদাকৃত টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার সময় উল্লাপাড়া থানাধীন পাবনা টু ঢাকা মহাসড়কের পূর্বপার্শ্বে মোহাম্মদ আলীর নির্মাণাধীন বিল্ডিং এর মোড়ে মহাসড়কে উঠার সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা ০১টি নোহা মাইক্রোবাস থেকে র্যা বের কটি পরিধানকৃত ৫/৬জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রাস্তায় নেমে মোটরসাইকেলটি সিগনাল দিয়ে থামায়। অজ্ঞাতনামা র্যা বের কটি পোষাকধারী ব্যক্তিরা মোঃ মামুনুর রশিদ এবং মোঃ জোনায়েদ রহমান মিরাজকে তাদের বহনকৃত টাকার ব্যাগসহ জোরপূর্বক মাইক্রোবাসের মধ্যে তুলে নেয় এবং তাদের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেয়, চোখ ও হাত বাঁধাসহ তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারীভাবে কিল-ঘুষি ও চর থাপ্পড় মারে। তাদের নিকটে থাকা নগদ ২৮,৫৫,০০০/- টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে তাড়াশ থানাধীন হামকুরিয়া ৯ ও ১০ নং ব্রীজের মাঝামাঝি স্থানে চোখ ও হাত বাধা অবস্থায় মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দ্রুত চলে যায়। এই ঘটনায় উল্লাপাড়া মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া মডেল থানার মামলা নং-১৩, তারিখ-১৪/১২/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-১৭০/১৭১/৩৬৫/৩৯৫/৩৯৭/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। চাঞ্চল্যকর এই ডাকাতির ঘটনাটি দেশব্যাপি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফারুক হোসেন মহোদয় এই ডাকাতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্ত এবং গ্রেফতারের জন্য একটি চৌকস টিম গঠন করেন। জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এ্যান্ড অপস্), সিরাজগঞ্জ এর তত্বাবধানে জনাব মোঃ আদনান মুস্তাফিজ, সহকারী পুলিশ সুপার, কামারখন্দ সার্কেল, জনাব অমৃত সূত্রধর, সহকারী পুলিশ সুপার, উল্লাপাড়া সার্কেল ও জনাব মোঃ একরামুল হোসাইন, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জ এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ)/মোঃ নাজমুল হক, বিপিএম, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জসহ একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সহিত জড়িত ডাকাতদের সনাক্ত করেন এবং ঢাকা, গাজীপুর, নাটোরসহ সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় নিদ্রাহীন, বিরামহীন ও নিরবিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ১১জন ১। মোঃ জীবন পারভেজ রেজা(৪৭), পিতা-মোঃ আব্দুল মজিদ, সাং-বাতিয়া, থানা-শাহজাদপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ, ২। মোঃ বাচ্চু মিয়া(৪৭), পিতা-মৃত আঃ জলিল, সাং-বাতিয়া, থানা-শাহজাদপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ, ৩। মোঃ রবিউল করিম(৪৫), পিতা-মৃত তুরাফ মন্ডল, সাং-বাতিয়া, থানা-শাহজাদপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ, ৪। মোঃ আফজাল মিয়া @ উজ্জল(৪০), পিতা-মৃত ময়না মিয়া, সাং-করতল, থানা-রাজনগর, জেলা-মৌলভীবাজার, ৫। মোঃ জয়(৪০), পিতা-মৃত আব্দুল খালেক, সাং-জুরকাঠি, থানা-নলছিড়ি, জেলা-ঝালকাঠি, ৬। মোঃ সুমন মিয়া(৪০), পিতা-নুরুল ইসলাম, সাং-সাতবাড়ীয়া, থানা-মতলব উত্তর, জেলা-চাঁদপুর, ৭। মোঃ সুমন (৪৭), পিতা-মৃত সৈয়দুল রহমান, সাং-ধাতুয়া, থানা-শ্রীরবদী, জেলা-শেরপুর, ৮। মোঃ শাহাদাত হোসেন(৫৫), পিতা-মোঃ হোসেন আলী, সাং-বড় মাছুয়া, থানা-মঠবাড়ীয়া, জেলা-পিরোজপুর, ৯। মোঃ আপেল(৩৬), পিতা-মৃত আনারুল, সাং-মানিকপাড়া, থানা-আক্কেলপুর, জেলা-জয়পুরহাট, ১০। মোঃ শহিদুল ইসলাম(৪৪), পিতা-মৃত আবুল হোসেন সরদার, সাং-নবিন পূর্বপাড়া, থানা-চাটমোহর, জেলা-পাবনা, ১১। মোঃ মোস্তফা কামাল @ জয়(৪৭), পিতা-মোঃ আব্দুর রহিম, সাং-ভুটাল (হাজীবাড়ী), থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত আলামতঃ ১। ০১টি TOROTA X-NOHA মাইক্রোবাস, ২। ০১টি লাল কালো রংয়ের বাজাজ ডিসকোভার মোটরসাইকেল, ৩। ০১ জোড়া হ্যান্ডকাপ কাভার ও চাবিসহ, ৪। ০২টি ডাকাতদের ব্যবহৃত র্যা বের কটি, ৫। ০১টি অকিটকি সেট চার্জারসহ, ৬। ডাকাতদের ব্যবহৃত ১৭ টি মোবাইল। ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারঃ ১। ০১টি খেলনা পিস্তল (কাভারসহ)। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, র্যা ব ও ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে। তাদের নিয়মিত ডাকাতি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ১২/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে সকাল হতে উল্লাপাড়া থানা এলাকায় অবস্থান করে। গ্রেফতারকৃত ডাকাত মোঃ রবিউল করিম শাহজাদপুর ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এ চাকুরি করে। তার দেয়া তথ্য মতে অন্যান্য ডাকাতগণ উল্লাপাড়া থানাধীন মেসার্স মীর ট্যাভেলস্ নামক ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকে টার্গেট করে এবং ০২ জন ডাকাত মোটরসাইকেসহ ব্যাংকের আশেপাশে অবস্থান করে। ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এ কর্মরত মোঃ মামুনুর রশিদ এবং মোঃ জোনায়েদ রহমান মিরাজ মোট ২৮,৫৫,০০০/- টাকা নিয়ে ব্যাংক হতে বের হওয়ার তথ্য দিলে অন্যান্য ডাকাতেরা মাইক্রোবাস থেকে র্যা বের কটি পরিধানকারী ডাকাতেরা মোটরসাইকেলটির গতিরোধপূর্বক মোঃ মামুনুর রশিদ এবং মোঃ জোনায়েদ রহমান মিরাজদ্বয়কে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নেয় এবং তাদের মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নগদ ২৮,৫৫,০০০/-টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে তাড়াশ থানাধীন হামকুরিয়া ৯ ও ১০ নং ব্রীজের মাঝামাঝি স্থানে চোখ ও হাত বাধা অবস্থায় ফেলে রেখে দ্রুত চলে যায়। ডাকাতেরা ডাকাতির টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবন্টন করে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যায়। দুর্ধর্ষ এই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সকল ডাকাতকে ঢাকা, গাজীপুর, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতারের পাশাপাশি ডাকাতদের ব্যবহৃত মালামালসহ লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এসংক্রান্তে ০৭ জন ডাকাত ঘটনার সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সার্বিক আইনানুগ প্রস্তুতি শেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।