পাবনা শহরে অভিনব কায়দায় আলোচিত দস্যুতা ঘটনার রহস্য উৎঘাটন এবং ছিনতাইকারী চক্রের তিনজন সদস্যই খোয়া যাওয়া সকল স্বর্ণ ও ৩১,০০০/- টাকা সহ গ্রেফতার। ঘটনা-১: গত ইং ১০/০১/২০২৩ তারিখ জনাব মোঃ জহির ডাক্তার এর ভাড়া বাসায় বিকাল ০৫.০০ ঘটিকার সময় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ পরিচয় প্রদান করে ২ জন ছেলে একটা গিফট বক্স নিয়ে যায়। ডাক্তারের স্ত্রীর সন্দেহ হলে তিনি তাদের বাসার ভিতরে ঢুকতে না দিয়ে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে বাসায় আসতে বললে আসামীগন তারাহুরা করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ডাক্তারের স্ত্রী তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারন করে এবং তাদের আটকের চেষ্টা করলে তারা দ্রুত দৌড়াইয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পারে। ঘটনা-২: গত ইং ১১/০১/২০২৩ তারিখে দুপুর আনুমানিক ১২.০০ ঘটিকার সময় পাবনা শহরের বড় বাজার এলাকার জনৈক মোঃ আরিফ চৌধুরী এর বাসায় ৩ জন যুবক কোচিং সেন্টারের টিচার হিসাবে পরিচয় দিয়ে বাসায় প্রবেশ করে তার স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে একটি ধারালো চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে আলমিরাতে থাকা নগদ ৭২ হাজার টাকা এবং ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার বলপূর্বক নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার পরিপেক্ষিতে পাবনা সদর থানায় একটি দস্যুতার মামলার রজু হয়। যার মামলা নং-৩১, তারিখ-১৭/০১/২০২৩ইং, ধারা-৩৯২, পেনাল কোড ১৮৬০। পাবনা জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আকবর আলী মুন্সী মহোদয়ের নির্দেশে অতিঃ পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে ডিবি পাবনা ও সদর থানার একটি চৌকশ টিম উক্ত অভিনব কায়দায় দস্যুতা সংগঠনের রহস্য উৎঘাটনের জন্য আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বিভিন্ন এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত আসামী ১. মোঃ লিখন হাসান (২৪), পিতা মৃত জমশের আলী, সাং-দীঘা, থানা- ঈশ্বরদী। (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র)। ২। মোহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকী @ অনিক(২২), পিতাঃ মোঃ আব্দুল্লাহিল কাফি, সাং-মিয়াপুর সুতাহাটি, থানাঃ কাশিয়াডাঙ্গা, জেলা রাজশাহী। (সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র)। ৩। মোঃ আবুল বাশার(২১), পিতাঃ মোঃ হাতেম আলী মন্ডল, সাং- ভাদুরিয়া ডাংগী, পোস্ট-চরতারাপুর, থানাও জেলা পাবনা। (বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ফোকাস কোচিং এ অধ্যায়নরত) দের গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামীদের নিকট হতে উক্ত ঘটনায় ছিনতাই হওয়া নিম্নবর্নিত টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত আলামতের বর্ণনাঃ ১. নগদ ৩১,০০০/-(একত্রিশ হাজার) টাকা। ২. ৪ (চার) ভরি স্বর্ণালংকার। ৩. আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ৪ টি। এখানে উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত ঘটনাগুলো একই গ্রুপ অভিনব কায়দায় সংগঠন করেছে। ধৃত আসামীরা পাবনা শহরে অন্যান্য বাসায় ও একই কায়দায় দস্যুতা সংগঠন করা পরিকল্পনা করেছিল বলে জানা যায়। আসামীরা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তারা অত্যান্ত বুদ্ধিমান এবং আইটি বিষয়ে অভিজ্ঞ। তারা হোয়াটস এ্যাপ বা অন্যান্য মিডিয়া ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতো। তারা যে বাসা গুলো টার্গেট করতো সে বাসা গুলো আগে থেকেই রেকি করে উক্ত বাসার মালিক ও পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতো এবং যেখানে যা পরিচয় দেওয়া দরকার সেখানে সেই পরিচয় দিতো। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ভারতীয় টিভি শো ক্রাইম পেট্রোল দেখে অভিনব কায়দায় অপরাধ করার কৌশল শিখেছে।