ঈশ্বরদীতে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা রহস্য উদঘাটন এবং চোরাইকৃত স্বর্ণ,রুপা ও স্বর্ণের বিক্রয়লব্ধ নগদ ৭,৯০,০০০/-টাকা উদ্ধার সহ গ্রেফতার (৯)

ঈশ্বরদীতে স্বর্ণের দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং চোরাইকৃত স্বর্ণ, রুপা ও স্বর্ণের বিক্রয়লব্ধ নগদ ৭,৯০,০০০/- (সাত লক্ষ নব্বই হাজার) টাকা উদ্ধার সহ আন্তঃ জেলা চোর/ডাকাত দলের ৯ (নয়) জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার। ঘটনাঃ গত ২৯ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখ দিবাগত রাত্রে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানাধীন আওতাপাড়া বাজারে মল্লিকা জুয়েলার্স নামক স্বর্ণের দোকানে এক দুর্ধর্ষ চুরি হয়। আসামীরা উক্ত স্বর্ণের দোকানের পাশে অবস্থিত কাপড়ের দোকানের ভিতর ঢুকে পাশের ওয়াল ছিদ্র করে স্বর্ণের দোকানে প্রবেশ করে উক্ত চুরি সংঘঠন করে। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় একটি চুরি মামলা রুজু হয় যার মামলা নং-০৪ তারিখ ০৩/১২/২০২২ইং ধারা-৪৬১/৩৮০ পেনাল কোড। উক্ত স্বর্ণ চুরির ঘটনার পর হতে পাবনা জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আকবর আলী মুনসী মহোদয়ের নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে মোঃ হাদিউল, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ঈশ্বরদী থানা এবং এসআই(নিরস্ত্র) অসিত কুমার বসাক, এসআই(নিরস্ত্র) সাগর কুমার সাহা উক্ত স্বর্ণের দোকান চুরির ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে পাবনা ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম একটানা ৩ দিন অভিযান পরিচালনা করে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানাধীন বানেশ্বর এলাকা হইতে আসামী ১। মোঃ সাঈদ (নাটোর), ২। মো: বাবুল হাওলাদার ওরফে ভারানী বাবুল (বাগেরহাট) ৩। মো: বাবুল হাওলাদার ওরফে বোকদা বাবুল (শরণখোলা) দের বানেশ্বর এলাকায় একটি স্বর্ণের দোকান চুরির পরিকল্পনা করারত অবস্থায় আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে উক্ত স্বর্ণের দোকান চুরির ঘটনায় অপর সহযোগীরা চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানা এলাকায় অপর একটি স্বর্ণের দোকান চুরির জন্য অবস্থান করিতেছে মর্মে জানা যায়। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানাধীন বড় বাজার এলাকা হইতে আসামী ১। মো: শহিদুল হাওলাদার (বাগেরহাট) ২। মো: আব্দুল মালেক (বাগেরহাট) ৩। মোঃ রুস্তম আলী শেখ (মোংলা) দের গ্রেফতার করা হয়। আসামীদের আওতাপাড়ায় স্বর্ণের দোকানে চুরি যাওয়া স্বর্ণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে তারা জানায় উক্ত স্বর্ণ গুলো তারা নিজের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে এবং বন্টনকৃত স্বর্ণ গুলো আসামী শহিদুল হাওলাদার, আব্দুল মালেক, এবং বাবুল হাওলাদার ওরফে ভারানী বাবুল তাদের ভাগের স্বর্ণ বাগেরহাট জেলার শরনখোলা এলাকার শান্ত মিস্ত্রি এবং মোড়েলগঞ্জ থানা এলাকার বাবুল কুলু দের নিকট বিক্রয় করিয়াছে। পরবর্তীতে বাগেরহাটের স্মরনখোলা ও মোড়েলগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে শান্ত মিস্ত্রি এর নিকট হইতে ০৩(তিন) ভরি ৫(পাঁচ) আনা স্বর্ণ এবং বাবুল কুলু কর্মকারের নিকট স্বর্ণ বিক্রয়ের ৭,৯০,০০০/-(সাত লক্ষ নব্বই হাজার) টাকা আসামী মোঃ শহিদুল হাওলাদার (বাগেরহাট) এর নিকট হইতে উদ্ধার করা হয়। ধৃত আসামী মোঃ সাঈদ কে চোরাই স্বর্ণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে সে জানায় তার ভাগের অংশ নাটোর সদর এলাকার হৈবতপুর সাকিনের মোঃ জালাল স্বর্ণকারে নিকট বিক্রয় করে এবং সেখান হইতে ৩(তিন)ভরি স্বর্ণ এবং ৫০(পঞ্চাশ)ভরি রুপা উদ্ধার করা হয়। এটি ছিল সম্পুর্ণ একটি ক্ল্যুলেস চুরি/ডাকাতির ঘটনা। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, আসামীগন একটি সংঘবদ্ধ আন্তজেলা চোর/ডাকাত চক্রেয় সক্রিয় সদস্য। তারা সাধারনত কোন এলাকায় চুরি সংঘঠনের পূর্বে সেই এলাকায় অবস্থান করিয়া পরিকল্পনা মাফিক চুরি করে এলাকা ত্যাগ করে। স্থানীয় কারো সাথে যোগাযোগ ও থাকেনা। তারা মুলতঃ দেশের বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকান চুরি/ডাকাতি করে থাকে। তাদের মডাস অপারেন্ডি প্রায় এই ধরণের। উদ্ধারকৃত আলামত সমূহের বর্ণনাঃ- ১. চোরাইকৃত স্বর্ণ ০৬(ছয়) ভরি ৫ (পাঁচ) আনা। ২. চোরাইকৃত রুপা ৫০(পঞ্চাশ) ভরি । ৩. চোরাইকৃত স্বর্ণ বিক্রয়ের ৭,৯০,০০০/-(সাত লক্ষ নব্বই হাজার) টাকা। ৪. চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি (একটি লোহার রড, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি স্টার ড্রাইভার, একটি প্লাস, একটি হাতুড়ি, একটি সোচালো লৌহ দন্ড ইত্যাদি। ৫. আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ১০টি। অভিযানে মোট গ্রেফতারকৃত আসামী ৯ জন। আসামীদের নাম ঠিকানা ও অপরাধ চিত্রঃ ১। মো: শহিদুল হাওলাদার (৪৯),ডাকাত সর্দার, পিতা- মৃত রুহুল আমিন, সাং- মধ্য খোন্তাকাটা, থানা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট। এর বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ মোট ১০(দশ)টি মামলা আছে। ২।মো: আব্দুল মালেক(৪০), পিতা- মো: আব্দুর রহমান, সাং- মধ্য খোন্তাকাটা, থানা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট। এর বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ মোট ৭ (সাত) টি মামলা আছে। ৩।মো: বাবুল হাওলাদার ওরফে ভারানী বাবুল(৫২), পিতা-মৃত আব্দুর রহমান, সাং- মধ্য খোন্তাকাটা, থানা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট। এর বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ মোট ১০টি মামলা আছে। ৪। মো: বাবুল হাওলাদার ওরফে বোকদা বাবুল(৫০), পিতা- মো: শাহজাহান হাওলাদার, সাং- মধ্য খোন্তাকাটা, থানা- শরণখোলা, জেলা- বাগেরহাট। এর বিরুদ্ধে চুরি,ছিনতাই,ডাকাতি, হত্যা চেষ্টা সহ মোট ৮টি মামলা আছে। ৫। মোঃ সাঈদ (৫৭), পিতা-মৃত আব্দুস ছাত্তার, সাং-পারখোলাবাড়ীয়া, থানা-নাটোর সদর জেলা-নাটোর। এর বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি মামলা সহ ৩টি মামলা আছে। ৬।মোঃ জালাল উদ্দিন (৩৭), পিতা-মৃত দরবেশ আলী, সাং-হৈবতপুর থানা-নাটোর সদর, জেলা-নাটোর। এর বিরুদ্ধে ৩টি মামলা আছে। ৭। মোঃ রুস্তম আলী শেখ (৬০), পিতা-মোঃ ফজলুল হক, সাং-মোরশেদ সড়ক শেহলাবুনিয়া, থানা-মোংলা, জেলা-বাগেরহাট। এর বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি সহ মোট ৩টি মামলা আছে। ৮।মোঃ শান্ত মিস্ত্রি (২০), পিতা-রতন মিস্ত্রি, সাং-ধানসাগর, থানা-শরণখোলা, জেলা-বাগেরহাট ৯। বাবুল কুলু (৫৩), পিতা-শম্ভুনাথ কুলু, সাং-খেজুরবাড়ীয়া, থানা-মোড়েল গঞ্জ, জেলা-বাগেরহাট ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে বাংলাদের বিভিন্ন থানায় ১০(দশ)টি ওয়ারেন্ট পেন্ডিং ছিল।







সর্বশেষ সংবাদ
DIG Homepage