মানবিক পুলিশ টিম নওগাঁর কনস্টেবল সারোয়ার

মহামারী করোনার করালগ্রাসে বিশ্ব যখন প্রায় বিপর্যস্ত, একদল মানুষ তাদের মানবিক গুণের নির্যাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন ধরণী মাতাকে। অলীক কোন ফটোসেশন নয়,সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্লজ্জ আত্মরম্ভিতার সাড়ম্বর পোস্ট নয়, মহান ত্রাতা সাজার দুর্বৃত্ত লোভ নয়- এই মানুষগুলো অন্তরালেই তাদের যত্ন, মমতা আর সেবা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন মনুষ্যত্বকে, রেখে যাচ্ছেন অমূল্য উদাহরণ। তেমনি এক নিভৃতচারী পরোপকারী পুলিশ কনস্টেবল সারোয়ারের কথা বলছি, যার জন্য গর্বিত হতে পারে সমগ্র পুলিশ বাহিনী,সমগ্র বাংলাদেশ, প্রকারান্তরে প্রতিজন পৃথিবীবাসীই। প্রায় মাস চারেক পূর্বের কথা। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চৌমাসিয়া নওহাটা মোড়ে প্রচন্ড জ্বর নিয়ে পড়েছিলেন এক অসহায় বৃদ্ধা। তার সামনে দিয়ে অনেক মানুষ গেলেও খোঁজ নেয়নি কেউই। বেশ অনেক সময় পরে নওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল সারোয়ার দেখতে পান বৃদ্ধাকে। নাম পরিচয়হীন, কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান নিজ উদ্যোগে। সুস্থ হবার পরে তাকে তার নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দেবার জন্য তার নাম, ঠিকানা জানার চেষ্টা করলেও বৃদ্ধা সঠিকভাবে তা বলতে পারেন না। উপায়ন্তর না দেখে সারোয়ার চৌমাসিয়া বাজার বণিক সমিতির কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে যাত্রী ছাউনিতে বৃদ্ধাটির থাকার একটি ব্যবস্থা করেন। থাকার ব্যবস্থা হলেও খাবারের জন্য কি করা যায় ভাবতে থাকেন। পরে সারোয়ারের সহধর্মিনী নিজে দুইবেলা রান্না করে বৃদ্ধার জন্য খাবার পাঠাতে শুরু করেন । সকালের খাবার পার্শ্ববর্তী হোটেল থেকে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন সারোয়ার। কিন্তু করোনার কারণে হোটেল বন্ধ থাকায় নিজের বাড়ি থেকে তিন বেলার খাবার এনে দেন এই পুলিশ কনস্টেবল। এমনকি নাইট ডিউটি শেষ করে ভোরবেলা বাড়িতে পৌঁছালেও সকালবেলা বৃদ্ধা মায়ের খাবারটি দিয়ে যেতে ভুল হয়না কখনোই। এভাবেই গত চার মাস থেকে সকলের অগোচরে বৃদ্ধা মায়ের সেবা-শুশ্রূষাসহ সকল দায়িত্ব পালন করে চলেছেন পুলিশ কনস্টেবল সারোয়ার। নওগাঁ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার প্রকৌশলী জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম মহোদয়সহ টিম নওগাঁর প্রতিটি সদস্যের পক্ষ থেকে সারোয়ারের জন্য রইল গভীর কৃতজ্ঞতা আর ভালবাসা।







সর্বশেষ সংবাদ
DIG Homepage