নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ কর্তৃক মাত্র ৬ ঘন্টার মধ্যেই গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা কান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন সহ বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান
২৮ জুলাই, ২০২১
ভিকটিম উজ্জল হোসেন (৩২), পিতা-মৃত মোজাহারুল সরদার, সাং-বিল ভবানীপুর, থানা ও জেলা-নওগাঁ স্থানীয় আবু সাঈদ ক্যাবল নেটওয়ার্কে লাইনম্যান হিসেবে কাজ করিত। প্রতিদিনের ন্যায় ইং ২৪/০৭/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম উজ্জল হোসেন কাজ শেষে পার্শ্ববর্তী বিলভবানীপুর বাজারে যায়। কিন্তু রাত্রীবেলাও সে বাড়িতে ফিরিয়া না আসিলে ভিকটিমের পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় লোকজন পরের দিন ইং ২৫/০৭/২০২১ তারিখ সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় নওগাঁ সদর মডেল থানাধীন বিল ভবানীপুর গ্রামস্থ খেরচারা বরেন্দ্র ডিপ মিশন এর পশ্চিম পার্শ্বে জনৈক মোঃ আতোয়ার হোসেন, পিতা-মৃত মহির মন্ডল, সাং-বিলভবানীপুর, থানা ও জেলা-নওগাঁ এর পাটের জমির উত্তর পার্শ্বে ভিকটিমের গলার পিছনে সহ সামনে ও বাম কানে কাঁটা, ডান হাতের মধ্যমা আঙ্গুলে কাঁটা ও দুই পায়ের রগ কাঁটা রক্তাক্ত অবস্থায় মৃতদেহ দেখতে পায়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মাতা মোছাঃ রহিমা (৫০), পিতা-মৃত খবির, স্বামী-মৃত মোজাহারুল সরদার, সাং-বিল ভবানীপুর, থানা ও জেলা-নওগাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অত্র থানায় মামলা নং-৩১/২৮৪, তারিখ-২৫/০৭/২০২১ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। ঘটনার মাত্র ৬ ঘন্টার মধ্যেই নওগাঁর জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার প্রকৌশলী জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম স্যারের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) জনাব মোঃ একেএম মামুন চিশতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) জনাব মোঃ গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, নওগাঁ জনাব সাবিনা ইয়াসমিন, জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম জুয়েল, অফিসার ইনচার্জ, এসআই (নিঃ) মোঃ নাজমুল জান্নাত শাহ এবং মামলা তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ মাসুদ রানা সহ অন্যান্য অফিসার ও ফোর্স নওগাঁ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করিয়া ঘটনার সহিত প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ১। মোঃ সুজন সরদার (২৯), পিতা-মোঃ মফিজ উদ্দিন সরদার, ২। মোঃ শরিফ উদ্দিন (২৩), পিতা-মোঃ সিরাজুল ইসলাম @ সিরাজ, উভয় সাং-বিলভবানীনপুর, থানা ও জেলা-নওগাঁদ্বয়কে গ্রেফতার করে এবং হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু আলামত হিসাবে জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে এবং তাহারা স্বেচ্ছায় কাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করিয়াছে। প্রাথমিক ভাবে বর্ণিত গ্রেফতারকৃত ১নং ও ২নং আসামী অপর পলাতক আসামী মোঃ রায়হান সরদার, পিতা-মৃত রহিম উদ্দিন সরদার, সাং-বিলভবানীপুর, থানা ও জেলা-নওগাঁর সহিত ডিসের ব্যবসাসহ নেশার টাকা নিয়া ভিকটিম উজ্জলের সহিত বিরোধ ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামী ও অপর আসামী শরিফ উদ্দিন এর সাথেও পাওনা টাকা নিয়া বিরোধ ছিল। টাকা পয়সার বিরোধকে কেন্দ্রে করিয়া আসামী রায়হান তাহার দোকান ঘরে ঈদের পরের দিন ২২/০৭/২০২১ তারিখ আসামী সুজন ও শরিফ দ্বয়কে ফোন করিয়া ডাকিয়া নিয়া পরিকল্পনা করে ভিকটিম উজ্জলকে জবাই করিয়া হত্যা করিবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ইং ২৪/০৭/২০২১ তারিখ রাত্রী অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় আসামী সুজন, শরিফ ও রায়হান ভিকটিম উজ্জলসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ভিকটিম মাদক সেবন করাকালে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী সুজন ও শরিফ ধারালো চাকু পূর্বে তাহাদের নিকট রাখে। একপর্যায়ে পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী সুজন প্রস্রাব করার কথা বলিয়া ভিকটিমের পিছনে যায় এবং তাহার কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়া গলায় জোরে পোচ মারিয়া গলা কাটিয়া ফেলে এবং শরীর চাপদিয়া ধরে রাখে। আসামী রায়হান সুজনের হাত থেকে চাকু নিয়া ভিকটিমের গলায় ও ঘারে পোচ মারে। আসামী শরিফ তাহার নিকটে থাকা ধারালো চাকু দিয়া ভিকটিমের পায়ের রগ কাটিয়া দেয়। ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আসামীগণ ভিকটিমের লাশ পাটের ক্ষেতে ফেলে যায়। আসামী সুজন ও শরিফ বাড়ী যাওয়ার পথে বিলের মধ্যে চাকু ২টি ফেলে যায়।